মাহে রমজানের অন্যতম একটি অংশ হলো সাহরি। রোজার প্রস্তুতি হিসেবে
মুসলিমরা সুবহে সাদিকের আগে সাহরি খেয়ে থাকেন। রাসূল (সা.) সাহরির গুরুত্ব
সম্পর্কে বিভিন্ন সময় বর্ণনা করেছেন। প্রিয় নবীজি তার সাহরিতে দুধ ও খেজুর
খেতে পছন্দ করতেন বলে জানা যায়।
হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন তোমরা সাহরি খাও কারণ সাহরিতে বরকত রয়েছে। (বুখারি শরিফ)
আরেক হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহরি খাওয়াকে মুসলিম ও অমুসলিমদের রোজার মধ্যে পার্থক্য হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
হযরত আমর ইবনে আস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন নিশ্চয়ই আমাদের রোজা ও আহলে কিতাবদের(ইহুদি খ্রিস্টান) রোজার মধ্যে তফাৎ হলে সাহরি খাওয়া।(মুসলিম শরিফ)।
যুগে যুগে রোজা
ইসলামের পাঁচটি মূল ভিত্তির একটি হলো রোজা। প্রতিবছর পবিত্র রমজান মাস জুড়ে সারা বিশ্বের মুসলিমরা সাওম পালন করে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।
আল্লাহপাক রোজা যে শুধু আমাদের ওপর ফরজ করেছেন তা নয়, মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর আগেও অন্যান্য নবী-রাসুলের যুগে রোজার বিধান ছিলো। পৃথিবীর প্রথম মানুষ আমাদের আদি পিতা হযরত আদম(আ.) ও বিবি হাওয়াও রোজা রেখেছিলেন বলে জানা যায়।
পরবর্তীতে অন্যান্য নবী রসুল(সা.) ও উম্মতের ওপরও রোজার বিধান আরোপ করা হয়েছিল। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছে, ‘হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনিভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা খোদাভীরুতা অর্জন করতে পারো। (সূরা বাকারা, আয়াত-১৮৩)।
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা আলুসি (র.) তার ‘রুহুল মাআনি’ তাফসিরে উল্লেখ করেছেন যে, উপরোক্ত আয়াতে ‘মিনকাবলিকুম’ দ্বারা হজরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে হজরত ঈসা (আ.) পর্যন্ত সব নবী-রসুলের সময়কে বুঝানো হয়েছে।
মহান আল্লাহতায়ালা হজরত আদম (আ.)-কে জান্নাতে প্রেরণ করে একটি গাছের ফল খেতে নিষেধ করেছিলেন। মূলত সেটিই ছিলো মানুষের প্রতি আল্লাহর প্রথম সংযমের নির্দেশ। আল কোরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করতে থাক এবং সেখানে যা চাও, যেখান থেকে চাও, পরিতৃপ্তসহ খেতে থাক, কিন্তু তোমরা ওই গাছের কাছে যেও না। (যদি যাও বা তার ফল খাও) তাহলে জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।’ (সূরা বাকারা, আয়াত-৩৫)। হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়া (আ.) শয়তানের প্ররোচনায় ওই গাছের ফল খেয়েছিলেন এবং পরিণামে মহান আল্লাহতায়ালা তাদের তাদের বেহেশত থেকে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেন।
এই ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয়েছিলেন হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়া (আ.)। এই ভুল থেকে ক্ষমা পেতে তওবা ইস্তিগফার করেন এবং এর কাফ্ফারা হিসেবে ধারাবাহিক ৪০ বছর রোজা রেখেছিলেন তারা।
হজরত আদম (আ.)-এর পর অন্য নবী-রসুলগণের যুগেও রোজার বিধান ছিল। তবে যুগে যুগে তাদের রোজা নিয়ম ও বিধানের ভিন্নতা ছিলো। হজরত নুহ (আ.) এর উপরও রোজা ফরজ ছিল। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘হজরত নুহ (আ.) শাওয়াল মাসের প্রথম দিন ও জিলহজ মাসের দশম দিন ব্যাতীত সারা বছর রোজা রাখতেন। (ইবনে মাজাহ)।
হজরত মুসা (আ.) এর ওপর তাওরাত কিতাব অবতীর্ণ হওয়ার আগে তিনি ৩০ দিন রোজা রেখেছিলেন বলে জানা যায়। আর ওহি নাজিল হওযার পর আল্লাহ তাকে আরও দশ ১০ দিন রোজা রাখার নির্দেশ প্রদান করেছিলেন। হজরত ইদ্রিস (আ.) সাড়া বছর রোজা রাখতেন। হজরত দাউদ (আ.) একদিন পর পর রোজা রাখতেন বলে জানা যায়।
হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর রোজা সম্পর্কে আমাদের নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) বলেন, ইব্রাহিম (আ.) প্রতি মাসের তিনদিন রোজা রাখতেন (ইবনে মাযাহ)। যাদের উপর প্রধান চারখানা আসমানি কিতাব নাযিল হয়েছে তার একজন হলেন হযরত দাউদ (আ.)। তার উপর নাযিলকৃত আসমানি কিতাবের নাম ‘যাবুর’। হযরত দাউদ (আ.) একদিন রোজা রাখতেন আর একদিন বাদ দিতেন। তার রোজার ব্যাপারে মুসলিম শরিফে উল্লেখ রয়েছে।
মহানবী (সা.) মদিনায় আগমন করার পর শুধু মহররমের আশুরায় রোজা রাখতেন। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণনা থেকে জানা যায়, রসুল (সা.) মদিনায় এসে ইহুদিদের মহররমের ১০ তারিখে রোজা রাখতে দেখেন। এদিন হজরত মুসা (আ.) ও তার কওমকে ফেরাউনের কবল থেকে মুক্ত করেছিলেন আল্লাহপাক ফলে শুকরিয়াস্বরূপ এ দিন মুসা (আ.) রোজা রেখেছিলেন। সেই দিনটির স্মরণেই ইহুদিরা আশুরায় রোজা রাখত।
রসুল(সা.) বললেন, আমরা তোমাদের(ইহুদিদের) চেয়ে মুসাকে (আ.) অনুসরণের অধিক হকদার। এরপর তিনি আশুরার দিন রোজা রাখলেন এবং সাহাবায়ে কেরামদের রোজা রাখার নির্দেশ প্রদান করলেন।
এরপর দ্বিতীয় হিজরির ১০ শাবান আসে আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে রোজা ফরজের বিধানের কোরআনের আয়াত। সেই থেকে প্রতিবছর রমজান মাসজুড়ে রোজা পালন ফরজ হয় উম্মতের ওপর।
হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন তোমরা সাহরি খাও কারণ সাহরিতে বরকত রয়েছে। (বুখারি শরিফ)
আরেক হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহরি খাওয়াকে মুসলিম ও অমুসলিমদের রোজার মধ্যে পার্থক্য হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন।
হযরত আমর ইবনে আস (রা.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন নিশ্চয়ই আমাদের রোজা ও আহলে কিতাবদের(ইহুদি খ্রিস্টান) রোজার মধ্যে তফাৎ হলে সাহরি খাওয়া।(মুসলিম শরিফ)।
যুগে যুগে রোজা
ইসলামের পাঁচটি মূল ভিত্তির একটি হলো রোজা। প্রতিবছর পবিত্র রমজান মাস জুড়ে সারা বিশ্বের মুসলিমরা সাওম পালন করে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য।
আল্লাহপাক রোজা যে শুধু আমাদের ওপর ফরজ করেছেন তা নয়, মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর আগেও অন্যান্য নবী-রাসুলের যুগে রোজার বিধান ছিলো। পৃথিবীর প্রথম মানুষ আমাদের আদি পিতা হযরত আদম(আ.) ও বিবি হাওয়াও রোজা রেখেছিলেন বলে জানা যায়।
পরবর্তীতে অন্যান্য নবী রসুল(সা.) ও উম্মতের ওপরও রোজার বিধান আরোপ করা হয়েছিল। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে বলেছে, ‘হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেমনিভাবে ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তীদের ওপর, যাতে তোমরা খোদাভীরুতা অর্জন করতে পারো। (সূরা বাকারা, আয়াত-১৮৩)।
এ আয়াতের ব্যাখ্যায় আল্লামা আলুসি (র.) তার ‘রুহুল মাআনি’ তাফসিরে উল্লেখ করেছেন যে, উপরোক্ত আয়াতে ‘মিনকাবলিকুম’ দ্বারা হজরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে হজরত ঈসা (আ.) পর্যন্ত সব নবী-রসুলের সময়কে বুঝানো হয়েছে।
মহান আল্লাহতায়ালা হজরত আদম (আ.)-কে জান্নাতে প্রেরণ করে একটি গাছের ফল খেতে নিষেধ করেছিলেন। মূলত সেটিই ছিলো মানুষের প্রতি আল্লাহর প্রথম সংযমের নির্দেশ। আল কোরআনে আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘হে আদম! তুমি ও তোমার স্ত্রী জান্নাতে বসবাস করতে থাক এবং সেখানে যা চাও, যেখান থেকে চাও, পরিতৃপ্তসহ খেতে থাক, কিন্তু তোমরা ওই গাছের কাছে যেও না। (যদি যাও বা তার ফল খাও) তাহলে জালিমদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবে।’ (সূরা বাকারা, আয়াত-৩৫)। হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়া (আ.) শয়তানের প্ররোচনায় ওই গাছের ফল খেয়েছিলেন এবং পরিণামে মহান আল্লাহতায়ালা তাদের তাদের বেহেশত থেকে পৃথিবীতে পাঠিয়ে দেন।
এই ভুলের জন্য অনুতপ্ত হয়েছিলেন হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়া (আ.)। এই ভুল থেকে ক্ষমা পেতে তওবা ইস্তিগফার করেন এবং এর কাফ্ফারা হিসেবে ধারাবাহিক ৪০ বছর রোজা রেখেছিলেন তারা।
হজরত আদম (আ.)-এর পর অন্য নবী-রসুলগণের যুগেও রোজার বিধান ছিল। তবে যুগে যুগে তাদের রোজা নিয়ম ও বিধানের ভিন্নতা ছিলো। হজরত নুহ (আ.) এর উপরও রোজা ফরজ ছিল। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘হজরত নুহ (আ.) শাওয়াল মাসের প্রথম দিন ও জিলহজ মাসের দশম দিন ব্যাতীত সারা বছর রোজা রাখতেন। (ইবনে মাজাহ)।
হজরত মুসা (আ.) এর ওপর তাওরাত কিতাব অবতীর্ণ হওয়ার আগে তিনি ৩০ দিন রোজা রেখেছিলেন বলে জানা যায়। আর ওহি নাজিল হওযার পর আল্লাহ তাকে আরও দশ ১০ দিন রোজা রাখার নির্দেশ প্রদান করেছিলেন। হজরত ইদ্রিস (আ.) সাড়া বছর রোজা রাখতেন। হজরত দাউদ (আ.) একদিন পর পর রোজা রাখতেন বলে জানা যায়।
হযরত ইব্রাহিম (আ.) এর রোজা সম্পর্কে আমাদের নবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) বলেন, ইব্রাহিম (আ.) প্রতি মাসের তিনদিন রোজা রাখতেন (ইবনে মাযাহ)। যাদের উপর প্রধান চারখানা আসমানি কিতাব নাযিল হয়েছে তার একজন হলেন হযরত দাউদ (আ.)। তার উপর নাযিলকৃত আসমানি কিতাবের নাম ‘যাবুর’। হযরত দাউদ (আ.) একদিন রোজা রাখতেন আর একদিন বাদ দিতেন। তার রোজার ব্যাপারে মুসলিম শরিফে উল্লেখ রয়েছে।
মহানবী (সা.) মদিনায় আগমন করার পর শুধু মহররমের আশুরায় রোজা রাখতেন। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণনা থেকে জানা যায়, রসুল (সা.) মদিনায় এসে ইহুদিদের মহররমের ১০ তারিখে রোজা রাখতে দেখেন। এদিন হজরত মুসা (আ.) ও তার কওমকে ফেরাউনের কবল থেকে মুক্ত করেছিলেন আল্লাহপাক ফলে শুকরিয়াস্বরূপ এ দিন মুসা (আ.) রোজা রেখেছিলেন। সেই দিনটির স্মরণেই ইহুদিরা আশুরায় রোজা রাখত।
রসুল(সা.) বললেন, আমরা তোমাদের(ইহুদিদের) চেয়ে মুসাকে (আ.) অনুসরণের অধিক হকদার। এরপর তিনি আশুরার দিন রোজা রাখলেন এবং সাহাবায়ে কেরামদের রোজা রাখার নির্দেশ প্রদান করলেন।
এরপর দ্বিতীয় হিজরির ১০ শাবান আসে আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে রোজা ফরজের বিধানের কোরআনের আয়াত। সেই থেকে প্রতিবছর রমজান মাসজুড়ে রোজা পালন ফরজ হয় উম্মতের ওপর।
0 মন্তব্য(গুলি):
Post a Comment